মৌলভীবাজারে

হাকালুকি হাওরে দেখা মিলল বিরল প্রজাতির ভূতি ও বৈকাল তিলিহাঁস

প্রকাশিত: ১০:১৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার থেকে:

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরে এবার দেখা গেছে বিশ্বব্যাপী বিপন্ন “বেয়ারের ভূতি হাঁস” এবং বাংলাদেশের বিরল প্রজাতির “বৈকাল তিলিহাঁস”।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের নেতৃত্বে ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি হাকালুকি হাওরে পরিযায়ী জলচর পাখি জরিপ শুমারি সম্পন্ন হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) আর্থিক সহায়তায় কেয়ার বাংলাদেশের নবপল্লব প্রকল্পের আওতায় এই জরিপ পরিচালিত হয়। সহযোগিতা করে বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর।

জরিপ দলে অংশ নেন পাখি বিশেষজ্ঞ ওমর শাহাদাত, ফাতুজো খালেক মিলা, সুলতান আহমেদ, মো. সাব্বির আহাম্মেদ, উজ্জ্বল দাস, আবু মুসা রাজু, মাহফুজ হিমেল এবং খোরশেদ আলম।

পর্যবেক্ষণের ফলাফল

জরিপে হাওরের ৪৫টি বিলে মোট ৩৫,২৬৮টি পাখি পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

  • বেয়ারের ভূতি হাঁস: ২টি (পিংলা বিল)।
  • বৈকাল তিলিহাঁস: ১টি (নাগুয়া-লরিবাই বিল)।
  • ফুলুরি হাঁস: ৩টি (সংকটাপন্ন)।
  • মরচে রঙের ভূতিহাঁস: ১৫৮৮টি।
  • উত্তুরে টিটি: ৬টি।
  • কালো মাথা কাস্তেঢ়রা: ৩৯৩টি।
  • পাতি ভূতিহাঁস: ৯০৯টি (বিশ্বব্যাপী বিপন্ন)।

অন্যদিকে, পিয়াং হাঁস ৫৫৫২টি, উত্তুরে ল্যাঞ্জ্যা হাঁস ৪২৭২টি এবং এশিয়া শামুকখোল ৪২২৮টি দেখা গেছে।

পাখির সংখ্যা হ্রাসের কারণ

  • হাওরের অধিকাংশ বিল শুকিয়ে যাওয়া।
  • মৎস্য আহরণ চলমান থাকা।
  • ধান চাষের বিস্তার।
  • নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল এবং বিষটোপ ব্যবহার।

পাখি সংরক্ষণে উদ্যোগ

জরিপ দলের প্রধান ওমর শাহাদাত বলেন, হাওরে পাখি শিকারের অসাধু পদ্ধতি এবং প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত মাছ ধরার ফাঁদ সমস্যা সৃষ্টি করছে। জরিপ চলাকালীন কিছু বিল থেকে অবৈধ জাল ধরেও ধ্বংস করা হয়।

পরিযায়ী পাখির জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে আরো বেশি অতিথি পাখি হাকালুকি হাওরে আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী।

উদ্বেগ ও সুপারিশ

পরিযায়ী পাখিদের অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে অবৈধ শিকার বন্ধ এবং জলাভূমি সংরক্ষণের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।